আন্তর্জাতিক ডেস্ক ॥ রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশকে সাহায্য করা ও মিয়ারমারের ওপর চাপ প্রয়োগের জন্য ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তিনিও গুতেরেস। ভারত সফরে থাকা গুতেরেস মঙ্গলবার একটি টাউন হল মিটিংয়ে এই আহ্বান জানান। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া এ খবর জানিয়েছে।
গত বছরের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে নতুন করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রায় ৭ লাখ মানুষ। সম্প্রতি জাতিসংঘের প্রতিবেদনে রোহিঙ্গা নিপীড়নের ঘটনায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে দায়ী করা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক বিতাড়িত করার সময় তাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধগুলো যুদ্ধাপরাধ নাকি মানবতাবিরোধী অপরাধ; এরইমধ্যে তা খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত-আইসিসি।
গুতেরেস বলেন, ‘ভারত কী করতে পারে? প্রথমত, ব্যাপক মানবিক সমস্যার মুখে থাকা বাংলাদেশকে সাহায্য করতে হবে। দ্বিতীয়ত, শুধু রোহিঙ্গা গ্রামগুলোর পুনর্র্নিমাণই নয়, সেখানে মানুষজনের ফিরে যাওয়ার পরিবেশ তৈরির জন্য ভারতকে অবশ্যই মিয়ানমারের ওপর চাপ দিতে হবে। বর্তমান পরিস্থিতি এমন হয়ে আছে যে, সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করতে পারে। আর এটা হলে তা পুরো অঞ্চলেই নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। ভাগ্য ভালো, এখনও খুব বেশি রোহিঙ্গাকে তারা দলে ভেড়াতে পারেনি আর আমাদের এখনও ওই পরিস্থিতি এড়ানোর সুযোগ রয়েছে। কিন্তু বৈষম্য ও অমীমাংসিত সমস্যা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে সুযোগ করে দেবে।’
বাংলাদেশ সম্পর্কে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশের মতো দেশ ১০ লাখ শরণার্থী গ্রহণ করে এমনটা অগ্রহণযোগ্য। আমার মতে, উদারতা দৌলতের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।’ মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের প্রতি গুতেরেস বলেন, ‘আমি রোহিঙ্গাদের মতো এতো বৈষম্যের শিকার সম্প্রদায় বিশ্বের আর কোথাও দেখিনি।’
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কার বিষয়ে গুতেরেস বলেন, ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরের বিশ্ব থেকে আজকের বিশ্ব সম্পূর্ণ আলাদা আর জাতিসংঘেরও পরিবর্তন দরকার। অনেক নাটকীয় সংকটে নিরাপত্তা পরিষদ অচল হয়ে ছিল কারণ এর পাঁচ সদস্যকে অবশ্যই একমত হতে হবে।’ আন্তর্জাতিক সংন্ত্রাসবাদ বিষয়ে ভারতের প্রস্তাবকে সমর্থন করে গুতেরেস বলেন, এই বিশ্ব সংস্থাটি ইতোমধ্যে সন্ত্রাস দমন বিষয়ে একটি বিশেষ দফতর সৃষ্টি করেছে।
Leave a Reply